পাবনা জেলার সড়ক মহাসড়ক গুলোতে অবাধে চলছে অবৈধ যানবাহন

পাবনা জেলার সড়ক মহাসড়ক গুলোতে অবাধে চলছে অবৈধ যানবাহন

পাবনা প্রতিনিধিঃ-
পাবনা জেলার সড়ক মহাসড়ক গুলোতে অবাধে চলছে অবৈধ যানবাহন,আর এতে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা । দিন দিন এসব অবৈধ যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে। জানা গেছে, প্রায় ১৫-২০ বছর আগে  পাবনা জেলার গ্রামীণ সড়কে সীমিত সংখ্যক নসিমন চলাচল শুরু হয় । নলকূপের শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে স্থানীয় গ্যারেজে নসিমন তৈরি হয়। ব্যাপক চাহিদার কারণে নসিমন কারখানা গুলো ফুলে-ফেঁপে  উঠতে থাকে। তারপর ছাড়া হয় করিমন, আলমসাধু ও পঙ্খিরাজ নামের যান । বছর দশেক আগে পাবনাতে তৈরি হয় শ্যালো মেশিনের ইঞ্জিনে তৈরি মিনি ট্রাক পরে এর নাম দেয়া হয়েছে হাম্বার।
এখন বিভিন্ন স্থানে গ্যারেজে হাম্বার তৈরি হচ্ছে,বিনা বাধায় চলছে হাম্বার ট্রাক। এদিকে অবৈধ যানবাহনের সংখ্যা কত তার কোনো তথ্য বিআরটিএ বা প্রশাসনের কাছে নেই। হাইকোর্টের নির্দেশ আছে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে অবৈধ যান চলবে না। তারপরেও সড়ক মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে অবৈধ যানবাহন হটানো যাচ্ছে না। সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় দুই বছর আগে মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধ করলেও তা বন্ধ হয়নি। ঘন ঘন দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানির জন্য এ ধরনের যান বহুলাংশে দায়ী হলেও কিছুতেই মহাসড়কে এগুলোর চলাচল থামানো
যাচ্ছে না।

অল্প-মাঝারি দূরত্বে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনে চাহিদা থাকায় এবং গরিবদের জীবিকার প্রয়োজনে এগুলো বন্ধ করা যাচ্ছে না। স্থানীয় সরকারের অনুমতি নিয়ে ও চাঁদাবাজদের সন্তুষ্ট করে তিন চাকার যান চালু রয়েছে,ফলে মহাসড়কে নিরাপত্তার ভয়াবহ ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে । বর্তমানে আবার নতুন করে এসেছে গ্যাস চালিত সিএনজি,অটো ভ্যান,অটো রিক্সা,বোরাক,ইজি বাইক । রিক্সা এ  দেশের অনেকেরই প্রিয় বাহন খোলামেলা বলে চড়তে আরাম, খুব দূরে না হলে যে কোন গন্তব্যস্থানে যাওয়া যায়, ভাড়াও অধিকাংশ সময় নাগালে থাকে, পরিবেশ দূষণ হয় না বললেই চলে, হাওয়া খেতে
খেতে যাওয়া যায়, রিক্সা ভ্রমন কারো কারো কাছে রোমাঞ্চেরও বিষয় -সব মিলিয়ে রিক্সা চড়তে পছন্দ করেন না এমন লোক খুব একটা পাওয়া যাবে না।

তবে রিক্সায় চড়ার উল্টো দিকও আছে। যানজটের অন্যতম কারণ হিসেবে রিক্সাকেই চিহ্নিত করা হয়। যখন তখন দুর্ঘটনা, যত্রতত্র পার্কিং, অতিরিক্ত ভাড়া হাঁকানো কিংবা রিক্সাওয়ালার দুর্ব্যবহারসহ আছে আরো নানা বিড়ম্বনা। পাবনায় অবৈধ অটো রিক্সার সংখ্যা বৈধ রিক্সার দুইগুণ। পাবনার মহাসড়ক গুলোতে মোটর গাড়ির মতোই দাপট নিয়ে চলা এসব রির্চাজেবল ব্যাটারি চালিত অবৈধ অটো ও রিক্সার কারণে আগের চেয়েও বেড়েছে দুর্ঘটনা, যানজট। সাথে রিচার্জেবল ব্যাটারি দিয়ে এসব রিক্সা চালাতে হয় বলে বিদ্যুতের অপচয় ঘটছে। দিন যত যাচ্ছে ততই বাড়ছে ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সার পরিমাণ। অটো রিক্সার বৃদ্ধির কারণে বেড়েছে সড়ক দুর্ঘটনাও। প্রতিদিনই পাবনায় যেসব দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায় তার অধিকাংশ কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, সিএনজি,অটো ভ্যান,অটো রিক্সা,বোরাক,ইজি বাইকের পরিমাণ বৃদ্ধি, মহাসড়কের উপরে যেখানে সেখানে পার্কিং, অদক্ষ ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক চালক এবং অসাবধানতা কারণ। রির্চাজেবল ব্যাটারি চালিত অবৈধ অটো ভ্যান,অটো রিক্সা,বোরাক,ইজি বাইক,সিএনজি, চলছেই প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে । ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে প্রতিদিন অনুমান ২ হাজার সিএনজি, ৫ শতাধিক ব্যাটারী চালিত ইজি বাইক অটো রিক্সা ও ৫ শতাধিক ইঞ্জিন চালিত নিষিদ্ধ ভটভটি চলাচল করে থাকে। অটো রিক্সা চালক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন নিষিদ্ধ এ সব যানবাহনের চলাচলের নেতৃত্বে থাকা নেতারা, জেলা পুলিশ, হাইওয়ে ও থানা পুলিশ কে মাসিক মাসোয়ারা দিয়ে মহাসড়কে নিষিদ্ধ যানবাহন নামিয়ে দিয়েছেন ফলে হাইওয়ে ও থানা পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করছেন। নিষিদ্ধ যানবাহনের চালকেরা তোয়াক্কা করছেন না মহামান্য হাইকোর্টের রায় ও সরকারের সড়ক সেতু যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশ। এমতাবস্থায় সুশিল সমাজ সহ সচেতন মানুষ মনে করছেন মহাসড়কে নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হলে সড়ক দূর্ঘটনা ও যানজট অনেকাংশেই কমে যাবে, পাশাপাশি দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাবে মানুষের মূল্যবান জীবন। মহাসড়কে নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল বন্ধের জন্য জরুরী ভাবে সড়ক সেতু ও যোগাযোগ মন্ত্রীর সু-দৃষ্টি কামনা করছেন সচেতন মানুষ।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment